ভাবসম্প্রসারণ ১০. শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখ একফোঁটা দিলেম শিশির।
১০. শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখ একফোঁটা দিলেম শিশির।
সমাজ-সংসারে আত্মপ্রচারকারী দাম্ভিক লোকের অভাব নেই। যৎসামান্য দানের গর্বে অনেকেই আত্মপ্রচারে উৎসাহী হয়ে ওঠে। সংকীর্ণচেতা ব্যক্তি কখনোই কারো কোন হিত সাধনে এগিয়ে আসে না। হঠাৎ যর্দি কোন সময়ে অন্যের জন্য সামান্য কিছু করে থাকে তবে তার অহমিকার অন্ত থাকে না। তেমনিভাবে বলা যায়- দীঘির বুকে শৈবালের কথা। দীঘির পানিতে শৈবাল জন্মে। দিঘি থেকে আহার্য গ্রহণপূর্বক সে বড় হতে থাকে এবং বজায় রাখে নিজের অস্তিত্ব। দীঘির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা শৈবালের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। রাত্রে শিশির পড়ে শৈবালের গায়ে জমা হয়। হঠাৎ করে একফোটা শিশির দীঘিতে গড়িয়ে পড়ায় শৈবাল সগৌরবে তার কানের কথা দীঘিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এতে শৈবালের সংকীর্ণতা প্রকাশ পায়। এ সংসারেও একশ্রেণির লোক আছে, যারা অন্যের অনুগ্রহে একদিন ধন্য হয়েছিল অথচ তাদের সামান্যতম উপকার করে তারা দাম্ভিকতার সাথে তা প্রচার করে। উপকার করে তা প্রচার করলে উপকারের উদ্দেশ্য বিফল হয়। পক্ষান্তরে যারা মহান, উদারচেতা, পরোপকারী তারা কখনোই অন্যের উপকার করে তা কারো কাছে প্রচার বা প্রকাশ করেন না। প্রকৃতপক্ষে উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এবং তাদের প্রতি কোন অশোভন উক্তি করা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। কারো উপকার করে দমভ প্রকাশ করা অনুচিত। পরের উপকার করা সেবাব্রতের পুণ্যকর্ম মাত্র। যারা সঙ্কীর্ণ হৃদয়ের অধিকারী তারাই কেবল পরের সামান্য 'উপকার করে তা অহঙ্কার ভরে প্রচার করে থাকে।
No comments