ভাবসম্প্রসারণ ২৩. দুঃখের মতো এত বড় পরশপাথর আর নেই।
২৩. দুঃখের মতো এত বড় পরশপাথর আর নেই।
সুখ-দুঃখের চিরন্তন বিচরণ এ ধরায় অবস্থিত। দুঃখ-কষ্ট ভোগের মাধ্যমেই সুখলাভ সম্ভব হয়। মানব জীবন সুখের ফুলশয্যা নয়, বরং দুঃখের কণ্টকে পরিপূর্ণ। জীবনে সুখের চেয়ে দুঃখের পরিমাণ অনেক বেশি। দুঃখ আছে বলেই আমরা সুখকে অনুভব করতে পারি। দুঃখকে জীবন থেকে বাদ দেয়া যায় না। সুখ-শান্তি লাভের জন্য আমাদের অবশ্যই দুঃখের সমুদ্র পাড়ি দিতে হবে। মানুষ নিয়তই দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করে সুখ লাভে ব্যস্ত। কিন্তু নিরন্তর সুখ মানব জীবনে প্রশান্তি আনতে পারে না। কেননা এতে আসে অবসান ও ক্লান্তি। দুঃখ মানুষকে মানুষ হবার, দুঃখকে জয় করার, বাটি মানুষটি লাভ করার সুযোগ দান করে। সুখলাল করতে গেলে দুঃখ ভোগ করতেই হবে। এক্ষেত্রে দুঃখের কোনো বিকল্প নেই। দুঃখ মানব জীবনে এক ধ্রুব সত্য। দুঃখ যতই নির্মম হোক না, একে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে সুকৌশলে দুঃখকে জয় করতে হবে। পরশপাথরের পর্শে লোহাও সোনা হয়ে যায়। মানব জীবনের পরশপাথর হলো দুঃখ। কেননা দুঃখের পরশেই মানুষ মনুষ্যত্ব লাভ করে থাকে। দুঃখ না থাকলে দুঃখ জয়ের প্রশ্ন ওঠে না। আর দুঃখকে জয় না করলে কিছুতেই সুখলাত সম্ভবপর নয়। কাজেই দুঃখ মানব জীবনের সবচেয়ে বড় পরশপাথর দুঃখই সুখলাভের পথ নির্দেশ করে থাকে। দুঃখ মানুষের পরম পাথেয়। দুঃখই মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটায়।
No comments